এয়ারবাস ইস্যুতে জার্মান রাষ্ট্রদূতের উদ্বেগ নাকচ করলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
বিমান কেনা নিয়ে জার্মান রাষ্ট্রদূতের মন্তব্যকে গুরুত্বহীন বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশ কোন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের বিমান কিনবে— সে সিদ্ধান্ত দেশের বিশেষজ্ঞদের মূল্যায়ন ও জাতীয় প্রয়োজন অনুযায়ী নেওয়া হবে। এসব সিদ্ধান্ত ইউরোপ বা অন্য কোনো দেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ককে প্রভাবিত করবে না।
বুধবার (২৬ নভেম্বর) বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আমি বিশ্বাস করি না যে, কোনো বাণিজ্যিক চুক্তির ফলে আমাদের সামগ্রিক সম্পর্ক প্রভাবিত হবে। রাষ্ট্রদূতরা তাদের দেশের বাণিজ্যিক স্বার্থ তুলে ধরতেই পারেন, সেটিই স্বাভাবিক।”
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ বাইরের কোনো চাপ, মন্তব্য বা সুপারিশের ওপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত নেবে না। “আমাদের সিদ্ধান্ত হবে বিশেষজ্ঞদের মূল্যায়ন অনুযায়ী— অন্যরা কী বলবে, তার ওপর নয়।”
এর আগে সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘ডিক্যাব টক’ অনুষ্ঠানে জার্মান রাষ্ট্রদূত রুডিগার লটজ বলেন, এয়ারবাস কেনার প্রতিশ্রুতি থেকে সরে আসলে ইউরোপের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য সম্পর্ক এবং জিএসপি-সংক্রান্ত আলোচনার ওপর প্রভাব পড়তে পারে। তিনি দাবি করেন, ইউরোপ বাংলাদেশের বড় ক্রয়-সংক্রান্ত সিদ্ধান্তগুলো গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করে এবং এসব বাণিজ্যিক সিদ্ধান্ত দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কেও প্রভাব ফেলতে পারে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, “ব্যবসায়িক সম্পর্কের ক্ষেত্রে নির্ভরযোগ্যতা গুরুত্বপূর্ণ। ব্যবসায়িক পছন্দ বৃহত্তর কূটনীতিতে প্রভাব ফেলতে পারে।” তবে তিনি এটিও জানান যে, বাংলাদেশ সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারে এবং জার্মানি দুই দেশের দীর্ঘমেয়াদি ব্যবসায়িক সম্পর্ক বজায় রাখতে আগ্রহী।
এরই মধ্যে জাতীয় পতাকাবাহী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স নতুন বিমান কেনার প্রক্রিয়ায় রয়েছে। এই প্রতিযোগিতায় যুক্তরাষ্ট্রের বোয়িং এবং ইউরোপের এয়ারবাস উভয়ই প্রস্তাব দিয়েছে। বিমানের টেকনো-ফিন্যান্সিয়াল কমিটি বর্তমানে দুটি প্রস্তাব যাচাই করছে— এয়ারবাসের ১০টি এ৩৫০ ওয়াইড-বডি ও ৪টি এ৩২০নিও, এবং বোয়িংয়ের ১০টি ৭৮৭ ড্রিমলাইনার ও ৪টি ৭৩৭ ম্যাক্স বিমান।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা স্পষ্ট করে বলেন, “বাংলাদেশ যে সিদ্ধান্ত নেবে, তা দেশের স্বার্থ বিবেচনা করেই নেবে— কোনো বাহ্যিক চাপের কারণে নয়।”
