এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের শাখায় এগিয়ে ডাচ্ বাংলা ঋণে ব্র্যাক

  আকিব মাহমুদ
  প্রকাশিতঃ রাত ০৮:২৯, বুধবার, ২৯ নভেম্বর, ২০২৩, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩০
  • সবচেয়ে বেশি আউটলেট ডাচ বাংলা ব্যাংকের
  • ব্যাংক হিসাব বেশি ব্যাংক এশিয়ার
  • আমানত ও রেমিট্যান্স সংগ্রহ বেশি করে ইসলামী ব্যাংকে
  • ঋণ বেশি দেয় ব্র্যাক ব্যাংক
  • সবচেয়ে বেশি গ্রাহক গ্রামাঞ্চলে

২০১৩ সালের ৯ ডিসেম্বর এজেন্ট ব্যাংকিং নীতিমালা জারির পর ২০১৪ সালে প্রথম এ সেবা চালু করে বেসরকারি খাতের ব্যাংক এশিয়া। ১০ বছরের এই সেবায় শহরের তুলনায় গ্রামের মানুষই বেশি সম্পৃক্ত হয়েছে। এখন পর্যন্ত দেশের ৩১টি বাণিজ্যিক ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং সুবিধা দিচ্ছে। এ সেবায় আউটলেট স্থাপনে শীর্ষে অবস্থান করছে বেসরকারি খাতের ডাচ-বাংলা ব্যাংক। তবে ঋণ বিতরণে এগিয়ে রয়েছে ব্র্যাক ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিং সংক্রান্ত হালনাগাদ প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, গত সেপ্টেম্বর ডাচ বাংলা ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে আউটলেটের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ১৭১টি, যা এ খাতের মোট আউটলেটের ২৮ দশমিক ৭৭ শতাংশ। এরপরই অবস্থান করা ব্যাংক এশিয়ার আউটলেটর সংখ্যা ৫ হাজার ১১৬টি বা মোট আউটলেটের ২৩ দশমিক ৮৫ শতাংশ। এছাড়া ১২ দশমিক ৫৯ শতাংশ আউটলেটের মালিকানা নিয়ে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে ইসলামী ব্যাংক। ৪ দশমিক ৮৭ শতাংশ নিয়ে চতুর্থ স্থানে ব্র্যাক ব্যাংক এবং ৩ দশমিক ৪২ শতাংশ নিয়ে পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক। 
এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের আউটলেটের বিস্তারে ব্র্যাক ব্যাংক কিছুটা পিছিয়ে থাকলেও ঋণ বিতরণে এই ব্যাংকটি সবচেয়ে এগিয়ে। এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে বিতরন করা ঋণের ৬৩ শতাংশ একাই দিয়েছে ব্র্যাক ব্যাংক। গত সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকটি এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট ব্যবহার করে ৮ হাজার ৯৪৩ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করেছে। এজেন্টের মাধ্যমে ঋণ বিতরনে পরের অবস্থানে রয়েছে বেসরকারি খাতের সিটি ব্যাংক। এ ব্যাংকটি বিতরণ করেছে ১ হাজার ৯১০ কোটি টাকা বা ১৩ দশমিক ৪৮ শতাংশ। এছাড়া তৃতীয় অবস্থানে থাকা ব্যাংক এশিয়া ৮ দশমিক ৬৮ শতাংশ, ডাচ বাংলা ব্যাংক ৪ দশমিক ৮৩ শতাংশ এবং ইসলামী ব্যাংক ৪ দশমিক ৪১ শতাংশ ঋণ এজেন্ট ব্যাংকিং ব্যবহার করে বিতরণ করেছে। 
প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৩১টি ব্যাংকের মোট এজেন্টের সংখ্যা ১৫ হাজার ৫৪০টি, যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ১৪ হাজার ৬৬৩টি। একই সময়ে আউটলেট ২০ হাজার ১৭৭ থেকে বেড়ে হয়েছে ২১ হাজার ৪৪৮টি। এসব এজেন্টের ৮৩  দশমিক ৯৯ শতাংশ ও আউটলেটের ৮৫ দশমিক ৫০ শতাংশই গ্রামে।
তবে এজেন্ট ব্যাংকিং বিস্তৃত হলেও সেই তুলনায় এর মাধ্যমে ঋণ বিতরণ বাড়েনি। সেপ্টেম্বর প্রান্তিক শেষে বিতরণকৃত ঋণের পরিমাণ মাত্র ১৪ হাজার ১৯২ কোটি টাকা। গত প্রান্তিক শেষে ছিলো ১৩ হাজার ৪২ কোটি টাকা। অর্থাৎ তিনমাসে ঋণ বিতরণ বেড়েছে ৮ দশমিক ৮২ শতাংশ।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেন, সঠিকভাবে পরিচালনা করলে এজেন্ট ব্যাংকিং কার্যক্রমের মাধ্যমে সারা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের প্রতিটি ঘরে ঘরে ব্যাংকিং সেবা পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হবে। এ ছাড়া, এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে সংগৃহীত আমানতের অর্থে সিংহভাগ গ্রামীণ অর্থনীতিতে বিনিয়োগের সুযোগ করা গেলে তা গ্রামীণ অর্থনীতির চাকাকে আরও শক্তিশালী ও সচল রাখতে বিশেষ ভূমিকা রাখবে। আগামী দিনে সেই চেষ্টাই করা হবে বলেও জানান তারা।
তথ্য বলছে, এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি হিসাব খুলেছে ব্যাংক এশিয়ার গ্রাহকরা। এই মাধ্যমে খোলা মোট ব্যাংক হিসেবের ৩০ দশমিক ৪২ শতাংশই ব্যাংক এশিয়ার গ্রাহক। এছাড়া ডাচ বাংলা ব্যাংক ২৯ দশমিক ৯৬ শতাংশ, ইসলামী ব্যাংক ১৯ দশমিক ৯৭ শতাংশ এবং আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের ৪ দশমিক ১১ শতাংশ গ্রাহক এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে হিসাব খুলেছেন।
পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত সেপ্টেম্বর শেষে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মোট হিসাব ছিল দুই কোটি ৬ লাখ ৮৪ হাজার ৫৩৭টি। আর এই হিসাবের ৮৬ দশমিক ১৪ শতাংশই ছিল গ্রামের মানুষের। বাকি ১৩ দশমিক ৮৬ শতাংশের সম্পৃক্ততা মিলেছে শহরের অধিবাসীর। অর্থাৎ এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে কর্মকাণ্ডের হিস্যায় প্রতি বছর বাড়ছে গ্রামনির্ভরতা। এসব হিসাবের মধ্যে নারীদের অংশগ্রহণও ক্রমান্বয়ে বেড়েছে। এই সময়ে নারীদের হিসাব সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ২ লাখ ৮৭ হাজার ৮৮১টি, যা মোট হিসাবের ৪৯ দশমিক ৭৩ শতাংশ।
এছাড়া এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে সবচেয়ে বেশি আমানত ও রেমিট্যান্স সংগ্রহ করছে শরীয়াহভিত্তিক ইসলামী ব্যাংক। এই ব্যাংকটি এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মোট আমানতে ৩৮ দশমিক ৪৯ শতাংশ এবং রেমিট্যান্সের ৫২ দশমিক ৪৮ শতাংশ একই সংগ্রহ করে।
এজেন্ট ব্যাংকিং হিসাবে মোট আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩৫ হাজার ২০০ কোটি টাকা। যা গতবছরের একই সময়ে ছিল ৩০ হাজার ৬৬৩ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে আমানতের পরিমাণ ১৪ দশমিক ৮০ শতাংশ বেড়েছে। মূলত গ্রামীণ জনগোষ্ঠীই এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের এই আমানত রাখছেন। অর্থাৎ ৭৯ দশমিক ০৩ শতাংশই তাদের আমানত। গত তিন মাসে গ্রামে আমানত বেড়েছে ৭ দশমিক ৯৩ শতাংশ আর শহরে বেড়েছে ৩ দশমিক ৯৭ শতাংশ। এর মধ্যে আবার সিংহভাগই নারীদের আমানত। 
একই সময়ে এজেন্ট ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে রেমিট্যান্সের পরিমাণও বেড়েছে। সেপ্টেম্বর শেষে এক লাখ ৩৬ হাজার ৪৭৩ কোটি টাকার রেমিট্যান্স এসেছে। যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২৭ দশমিক ৯৯ শতাংশ বেশি। 
দেশের সুবিধা বঞ্চিত প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছে ব্যাংকিং সুবিধা পৌঁছে দিতেই ২০১৪ সালে চালু হয় এজেন্ট ব্যাংকিং কার্যক্রম। এ জন্য বাড়তি চার্জ গুনতে হয় না গ্রাহককে। ব্যাংকের ডেবিট কার্ড ব্যবহারের সুযোগও পাচ্ছেন তারা। এতে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে প্রতিনিয়ত বাড়ছে গ্রাহক সংখ্যা, সেই সঙ্গে বাড়ছে লেনদেনের পরিমাণও।

Share This Article


মঙ্গলবার দর পতনের নেতৃত্বে প্রিমিয়ার ব্যাংক

মঙ্গলবার দর বৃদ্ধির নেতৃত্বে এপেক্স ট্যানারি

মঙ্গলবার লেনদেনের নেতৃত্বে সোনালী আঁশ

সোমবার ব্লক মার্কেটে লেনদেনের নেতৃত্বে আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ

সোমবার দর পতনের নেতৃত্বে এশিয়া প্যাসিফিক জেনারেল ইন্সুরেন্স

সোমবার দর বৃদ্ধির নেতৃত্বে জেএমআই সিরিঞ্জ

সোমবার লেনদেনের নেতৃত্বে এশিয়াটিক ল্যাবরটরিজ

রোববার ব্লক মার্কেটে লেনদেনের নেতৃত্বে লাভেলো আইসক্রিম

রোববার দর পতনের নেতৃত্বে এডিএন টেলিকম

রোববার দর বৃদ্ধির নেতৃত্বে বিডি থাই এ্যালুমিনিয়াম

রোববার লেনদেনের নেতৃত্বে মালেক স্পিনিং

দাবদাহে ঢাকায় বছরে ক্ষতি ২৭০০ কোটি ডলার