সুশাসন ফেরাতে একাধিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানে সংস্কার

  আকিব মাহমুদ
  প্রকাশিতঃ রাত ০২:৪৬, বৃহস্পতিবার, ৪ জানুয়ারি, ২০২৪, ২০ পৌষ ১৪৩০
ফাইল ফটো
ফাইল ফটো

• ভেঙ্গে দেওয়া হচ্ছে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের পর্ষদ
• এমডি না থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোতে দ্রুতই দেওয়া হবে নিয়োগ
• দুর্বল আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে ভালো আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সাথে একত্রিত করার চিন্তা
• বহিষ্কার হতে পারেন অনিয়মে জড়িত একাধিক এমডি

ঋণ জালিয়াতি, প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনায় পরিচালনা পর্ষদের অবৈধ হস্তক্ষেপসহ নানা কারণে দীর্ঘদিন থেকেই আলোচনায় দেশের ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো। বিশেষ করে সুশাসন প্রতিষ্ঠিত না হওয়ায় বেশিরভাগ আর্থিক প্রতিষ্ঠান দুর্বল হয়ে পড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে বড় ধরণের সংস্কার আনার চিন্তা করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সে সাথে সুশাসন নিশ্চিত করতে প্রতিষ্ঠানগুলোতে পরির্দশন আরও বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে বলেও জানিয়েছে একটি সূত্র।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, গত জুন পর্যন্ত কার্যরত ৩৫টি মধ্যে ৬টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানেরই খেলাপি ৮৫ শতাংশের বেশি। আর ৯০ শতাংশের বেশি থাকা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৪টি। প্রতিষ্ঠান চারটি হচ্ছে, বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানির (বিআইএফসি) ৯৬ দশমিক ৯০ শতাংশ, ফারইস্ট ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের ৯৪ দশমিক ২৫ শতাংশ, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স সার্ভিসের ৯০ দশমিক ৯৩ শতাংশ এবং পিপলস লিজিংয়ের খেলাপি ৯৯ দশমিক ৬২ শতাংশ। এছাড়া ৯০ শতাংশের চেয়ে সামন্য কম এমন খেলাপি প্রতিষ্ঠান দুটি হচ্ছে, ফার্স্ট ফাইন্যান্সের ৮৯ দশমিক ৬৩ এবং জিএসপি ফাইন্যান্স কোম্পানির ৮৯ দশমিক ৯০ শতাংশ।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সূত্র বলছে, রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ, ঋণ অনিয়ম, চেয়ারম্যান-এমডি অর্থ আত্মসাৎসহ নানা অনিয়মের কারণে দেশের অধিকাংশ আর্থিক প্রতিষ্ঠান দুর্বল হয়ে পড়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানগুলোতে এতদিন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিদর্শনের পরিমাণও ছিলো কম। তাই প্রতিষ্ঠানগুলোতে সুশাসন ফেরাতে উদ্যোগ নিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ইতোমধ্যে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি এবং খেলাপি ঋণে জড়িয়ে থাকায় শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) পরামর্শে ফার্স্ট ফাইন্যান্সের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙ্গে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটিতে নতুন ৫ স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তারাই প্রতিষ্ঠানটিতে সুশাসন ফিরিয়ে আনতে কাজ করবেন। 
এদিকে, দীর্ঘদিন থেকে ৬টিতে ব্যবস্থাপনা পরিচালক নেই। প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে, ইউনিয়ন ক্যাপিটাল, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং, এফএএস ফাইন্যান্স, বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানি লি. (বিআইএফসি), ইউএই বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট কোম্পানি লি. ও জিএসপি ফাইন্যান্স। আর সম্প্রতি ঋণে অনিয়ম এবং প্রতিষ্ঠান ও আমানতকারীদের স্বার্থবিরোধী কাজে জড়িত থাকার অপরাধে ফিনিক্স ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এস এম ইন্তেখাব আলমকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। অর্থাৎ বর্তমানে ৭টি প্রতিষ্ঠানে এমডি নেই। এসব প্রতিষ্ঠানে দ্রুত সময়ের মধ্যে এমডি নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক বলেন, আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সার্বিক উন্নয়নে আমরা কাজ করে যাচ্ছি এবং এটা অব্যাহত থাকবে। ইতোমধ্যে আমরা একটি প্যানেল গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যাতে করে খাতটি দ্রুত এমডি খুঁজে পায়। এখান থেকে ভালো ফল আসবে বলে আমরা আশাবাদী। এছাড়াও সুশাসন ফিরিয়ে আনতে আমরা কাজ করছি।
অন্যদিকে, আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙ্গে দেওয়াসহ নানা ধরণের পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। এক্ষেত্রে অনিয়ম দুর্নীতির সাথে যুক্ত থাকা এমডি ও পর্ষদ সদস্যদের বিরুদ্ধে নেওয়া হতে পারে সিদ্ধান্ত। ইতোমধ্যেই ফিনিক্স ফাইন্যান্সের এমডিকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বহিষ্কার হতে পারেন আরও কয়েকজন এমডির বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। এছাড়া আদালতের নির্দেশনা মেনে পিপলস লিজিং ও ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের বিষয়েও সিদ্ধান্ত নিবে বাংলাদেশ ব্যাংক। 
বাংলাদেশ ব্যাংকের সূত্র বলছে, দুর্বল আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে ভালো আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সাথে একত্রিত করার চিন্তাও করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সেক্ষেত্রে সংস্থাটির সংশ্লিষ্ট বিভাগকে আইনি বিষয়গুলো খতিয়ে দেখতে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এরপরই জানুয়ারি মাসের শেষ দিকে একাধিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা কালবেলাকে বলেন, আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইন অনুযায়ী এক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সাথে অন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানের একত্রিত করার বিধান রয়েছে। তবুও আইনী বিষয়গুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এরপর দুর্বল কয়েকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে বড় ও ভালো কয়েকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সাথে একত্রিত করা হতে পারে। তবে ভালো আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোও দুর্বল আর্থিক প্রতিষ্ঠানের দায় নিতে চাইবেন কিনা সে বিষয়ে আলোচনা চলছে। যদি ভালো আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো দুর্বলগুলোর দায় নিতে না চান হবে একাধিক দুর্বল আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে একত্রিত করে দেওয়া হতে পারে।

Share This Article


মঙ্গলবার দর পতনের নেতৃত্বে প্রিমিয়ার ব্যাংক

মঙ্গলবার দর বৃদ্ধির নেতৃত্বে এপেক্স ট্যানারি

মঙ্গলবার লেনদেনের নেতৃত্বে সোনালী আঁশ

সোমবার ব্লক মার্কেটে লেনদেনের নেতৃত্বে আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ

সোমবার দর পতনের নেতৃত্বে এশিয়া প্যাসিফিক জেনারেল ইন্সুরেন্স

সোমবার দর বৃদ্ধির নেতৃত্বে জেএমআই সিরিঞ্জ

সোমবার লেনদেনের নেতৃত্বে এশিয়াটিক ল্যাবরটরিজ

রোববার ব্লক মার্কেটে লেনদেনের নেতৃত্বে লাভেলো আইসক্রিম

রোববার দর পতনের নেতৃত্বে এডিএন টেলিকম

রোববার দর বৃদ্ধির নেতৃত্বে বিডি থাই এ্যালুমিনিয়াম

রোববার লেনদেনের নেতৃত্বে মালেক স্পিনিং

দাবদাহে ঢাকায় বছরে ক্ষতি ২৭০০ কোটি ডলার