অক্টোপাস, শামুক ও ঝিনুক খাওয়া কি জায়েজ?

  নিজস্ব প্রতিবেদক
  প্রকাশিতঃ বিকাল ০৪:৫০, বুধবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০২৩, ১২ পৌষ ১৪৩০

বর্তমানে অক্টোপাস, শামুক, ও ঝিনুক খাবারের জনপ্রিয়তা দেশে উন্নত হয়েছে এবং এগুলো অনেক রেস্টুরেন্টে পাওয়া যায়। এই খাবারগুলি ভোজন রসিকরা হালাল মনে করে তবে এটি হারাম নাকি এই বিষয়ে মতপার্থক্য রয়েছে।

শরীয়তের বিধান অনুযায়ী, মাছ ছাড়া অন্য কোনো জলজ প্রাণী খাওয়া জায়েয নেই। সুতরাং অক্টোপাস, শামুক ও ঝিনুক যেহেতু মাছ নয়, তাই এগুলো খাওয়াও জায়েয নেই। তাই এগুলো খাওয়াও নাজায়েজ। (ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৩/১১৪; আল-বাহরুর রায়েক: ৮/৪৮৫; হাশিয়ায়ে তাহতাবি: ৪/৩৬০ ইমদাদুল ফাতাওয়া: ৪/১১৮)

প্রথমত এগুলো কোরআনে বর্ণিত ‘খাবায়েস’ (নোংরাবস্তু) এর অন্তর্ভুক্ত। সুরা আলআরাফ আল্লাহ তায়ালা এগুলোকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেন। ‘খাবায়েস’ বলা হয়, যা মানুষ স্বভাবগত ঘৃণা করে। (দ্রঃ তাফসিরে কাবির, আদওয়াউল বায়ান, আল-লুবাব, আলহাবি সংশ্লিষ্ট আয়াত)।

এ বিষয়ে বিভিন্ন মসজিদের খতিবরাও জানান, শরীয়তের বিধান হলো মাছ ছাড়া অন্যান্য জলজপ্রাণী রুচিশীল মানুষ স্বভাবতই ঘৃণা করে। সুতরাং সেগুলোও পবিত্র কুরআনের হুকুম অনুযায়ী নিষিদ্ধ।

দ্বিতীয়ত রাসুল (সা.) ও সাহাবায়ে কেরাম এ ধরনের জলজ প্রাণী খেয়েছেন বলেও কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় না। উপরন্তু আব্দুর রহমান বিন উসমান (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, ‘রসুল (সা.) জনৈক চিকিৎসককে ব্যাঙ মেরে ওষুধ বানাতে নিষেধ করেছিলেন। ’ (আবু দাউদ, হাদিস নং: ৩৮৭১)

তৃতীয়ত আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমাদের জন্য দুই প্রকারের মৃত জীব ও দুই ধরনের রক্ত হালাল করা হয়েছে। মৃত জীব দুইটি হলো মাছ ও ফড়িং এবং দুই ধরনের রক্ত হলো কলিজা ও প্লীহা। (ইবনে মাজাহ, হাদিস নং : ৩৩১৫; মুসনাদ আহমাদ, হাদিস নং: ৫৬৯০, দারাকুতনি, হাদিস নং : ৪৬৮৭, শারহুস সুন্নাহ, হাদিস নং : ২৮০৩)

অক্টোপাস আট বাহুবিশিষ্ট সামুদ্রিক প্রাণী। দেখতে শামুকের মতো না হলেও এরা শামুক-ঝিনুকের মতো মোলাস্কা পর্বের অন্তর্ভুক্ত। এদের মাথার ঠিক পেছনেই আটটি শুঁড়-পা আছে বলে এরা সেফালোপোডা বা ‘মস্তক-পদ’ শ্রেণিভুক্ত। অক্টোপাসের বৈজ্ঞানিক নাম Octopus vulgaris. সারা পৃথিবীতে প্রায় সব সাগরেই পাওয়া যায়।
 

Share This Article