বিদেশ ভ্রমণ ট্রেড লাইসেন্স ও রাষ্ট্রীয় সম্মাননা পাবে না ইচ্ছাকৃত খেলাপিরা

  নিজস্ব প্রতিবেদক
  প্রকাশিতঃ সন্ধ্যা ০৭:২০, মঙ্গলবার, ১২ মার্চ, ২০২৪, ২৭ ফাল্গুন ১৪৩০

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালা অনুযায়ী কোন ব্যক্তি ইচ্ছাকৃত খেলাপি হিসেবে প্রমাণিত হলে বিদেশ ভ্রমণ, ট্রেড লাইসেন্স গ্রহণে নিষেধাজ্ঞায় পড়বেন। পাশাপাশি তিনি কোন রাষ্ট্রীয় পুরস্কার বা সম্মাননার জন্য যোগ্য হবেন না। গতকাল মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে এ নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।

এতে বলা হয়, কোনো খেলাপী ঋণ গ্রহীতা ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানী নিজের, তার পরিবারের সদস্যের, স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানীর অনুকূলে কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে গৃহীত ঋণ, অগ্রিম, বিনিয়োগ বা আরোপিত সুদ বা মুনাফা তার সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও পরিশোধ করে না করলে তিনি ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপি হিসেবে বিবেচিত হবেন। এছাড়া জালিয়াতি, প্রতারণা বা মিথ্যা তথ্য প্রদানের মাধ্যমে বা যে উদ্দেশ্যে নেওয়া হয়েছে সে সে উদ্দেশ্য ব্যতীত অন্য কোন খাতে ব্যবহার করলে অথবা অন্য কোন ব্যাংকের জামানতকৃত সম্পদ অনুমতি ছাড়া নতুন ঋণে জামানত হিসেবে দেখালে তাকে ইচ্ছাকৃত খেলাপি হিসেবে বিবেচনা করা হবে।

এসব ইচ্ছাকৃত খেলাপীর বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা, ট্রেড লাইসেন্স ইস্যুতে নিষেধাজ্ঞা এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন ও রেজিস্ট্রার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানীজ অ্যান্ড ফার্মসের (আরকেএসসি) নিকট কোম্পানী নিবন্ধনে নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য সংশ্লিষ্ট সংস্থার নিকট তালিকা প্রেরণ করবে বাংলাদেশ ব্যাংক। একই সাথে ইচ্ছাকৃত খেলাপীর তালিকা গাড়ি, জমি, বাড়ি, ফ্ল্যাট ইত্যাদির নিবন্ধন কর্তৃপক্ষের নিকট প্রেরণ করবে সংস্থাটি। এসব সংস্থা তাদের আইন অনুযায়ী ইচ্ছাকৃত খেলাপির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। পাশাপাশি কোন ইচ্ছাকৃত খেলাপী রাষ্ট্রীয় পুরস্কার বা সম্মাননা পাওয়ারও যোগ্য হবেন না বলেও উল্লেখ করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রজ্ঞাপনে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, কোন ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ইচ্ছাকৃত খেলাপির তালিকায় কারও নাম আসলে ঋণ পরিশোধ করে তালিকা থেকে অব্যহতির ৫ বছরের মধ্যে কোন ব্যাংকের পরিচালক হতে পারবেন না। আর যদি কোন পরিচালক ইচ্ছাকৃত খেলাপি হয়ে পড়েন তবে তার পরিচালক পদ বাতিল হবে। কেউ ইচ্ছাকৃত খেলাপি হওয়ার পর তালিকার বিরুদ্ধে আপিল না করলে বা আপিল করার পর না মঞ্জুর হলে তাকে ২ মাসের মধ্যে অর্থ পরিশোধে জন্য নোটিশ দেওয়া হবে। এই সময়ের মধ্যে অর্থ পরিশোধে ব্যর্থ হলে পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদন ক্রমে খেলাপির বিরুদ্ধে ফৌজদারী মামলা দায়ের করবে ব্যাংক। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট ঋণ, অগ্রিম বা পাওনা আদায়ের ক্ষেত্রে অর্থ ঋণ আদালতের কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হবে না।

ইচ্ছাকৃত খেলাপী ঋণ গ্রহীতা সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রতি ত্রৈমাসিকে ব্যাংকের অডিট কমিটির সভায় উপস্থাপন করতে হবে। অডিট কমিটি উক্ত উপস্থাপিত প্রতিবেদন ও সংশ্লিষ্ট বিষয়াবলী পর্যালোচনান্তে গুরুত্ব বিবেচনায় এতদ্বিষয়ে তাদের মতামত বা সিদ্ধান্ত পরবর্তী পর্ষদ সভাকে অবহিত করবে। ব্যাংক কর্তৃক পরিচালিত নিয়মিত বা বিশেষ অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা প্রতিবেদনে ইচ্ছাকৃত খেলাপী ঋণ গ্রহীতার বিষয়ে পর্যালোচনাসহ একটি আলাদা অনুচ্ছেদ অন্তর্ভুক্ত করতে হবে এবং তা নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনে টীকা আকারে প্রকাশ করতে হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, ইচ্ছাকৃত খেলাপীর ঋণ হিসাবের বিপরীতে আরোপিত বা অনারোপিত কোনো সুদ মওকুফ করা যাবে না এবং পুনঃতফসিলও করা যাবে না। ইচ্ছাকৃত খেলাপীর ঋণ হিসাবটি অন্য কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক টেকওভার করা যাবে না। ওই ঋণ সম্পূর্ণ আদায় বা পরিশোধ না হওয়া পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট ঋণ গ্রহীতা ইচ্ছাকৃত খেলাপী ঋণ গ্রহীতা হিসেবেই বিবেচিত হবেন।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ইচ্ছাকৃত খেলাপিদের চিহ্নিত করতে ব্যাংকের এমডি ও সিইওর দুই ধাপ নিচের কর্মকর্তার অধীনে প্রধান কার্যলয়ে 'ইচ্ছাকৃত খেলাপী ঋণ গ্রহীতা শনাক্তকরণ ইউনিট' নামে একটি পৃথক ইউনিট আগামী ৯ এপ্রিলের মধ্যে গঠন করতে হবে। তারা ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী, কারা ইচ্ছাকৃত খেলাপি তা শনাক্ত করবেন। শনাক্ত হওয়ার পর শনাক্তকরণের কারণ উল্লেখ ইচ্ছাকৃত খেলাপিকে তার বক্তব্য প্রদানের জন্য ১৪ কর্মদিবস সময় দিবে। ওই সময়ের মধ্যে বক্তব্য প্রদানে ব্যর্থ হলে অথবা তার বক্তব্য যথাযথ বিবেচিত না হলে 'ইচ্ছাকৃত খেলাপী ঋণ গ্রহীতা শনাক্তকরণ ইউনিট' কর্তৃক এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার অনুমোদন গ্রহণ করতে হবে। তবে জাতীয় শিল্প নীতিতে বর্ণিত সংজ্ঞানুযায়ী 'বৃহৎ শিল্প' খাতের ৭৫ কোটি ও তদূর্ধ্ব, 'মাঝারি শিল্প' খাতের ৩০ কোটি ও তদূর্ধ্ব এবং অন্যান্য খাতের ১০ কোটি ও তদূর্ধ্ব স্থিতিসম্পন্ন ঋণের ক্ষেত্রে ব্যাংকের নির্বাহী কমিটির বা পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদন গ্রহণ আবশ্যক হবে। ইচ্ছাকৃত খেলাপী ঋণ গ্রহীতা হিসেবে চূড়ান্তকরণের পর সংশ্লিষ্ট ঋণ গ্রহীতাকে ৭ কর্মদিবসের মধ্যে লিখিতভাবে অবহিত করতে হবে।

কোনো ব্যাংক এসব নির্দেশনা লঙ্ঘন করলে বা ইচ্ছাকৃতভাবে বর্ণিত নির্দেশনা লঙ্ঘন করেছে মর্মে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিকট বিবেচিত হলে ব্যাংক কোম্পানী আইন, ১৯৯১ এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে উক্ত লঙ্ঘনের জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যাংক-কে অন্যূন ৫০ লক্ষ টাকা এবং অনধিক ১ কোটি টাকা জরিমানা আরোপ করা হবে। যদি উক্ত লঙ্ঘন অব্যহত থাকে, তাহলে উক্ত লঙ্ঘনের প্রথম দিনের পর প্রত্যেক দিনের জন্য অতিরিক্ত অনূর্ধ্ব ১ লক্ষ টাকা জরিমানা আরোপিত হবে।

Share This Article


সোমবার লেনদেনের নেতৃত্বে ওরিয়ন ইনফিউশন

রোববার ব্লক মার্কেটে লেনদেনের নেতৃত্বে সোনালী আঁশ

রোববার দর পতনের নেতৃত্বে এডিএন টেলিকম

রোববার দর বৃদ্ধির নেতৃত্বে ফার ইস্ট নিটিং

রোববার লেনদেনের নেতৃত্বে ওরিয়ন ইনফিউশন

বৈশ্বিক ঋণ রেকর্ড ৩১৩ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে: আইএমএফ

সাপ্তাহিক দর বৃদ্ধির নেতৃত্বে জেএমআই সিরিঞ্জ

সাপ্তাহিক দর পতনের নেতৃত্বে রূপালী ব্যাংক

সাপ্তাহিক লেনদেনের নেতৃত্বে মালেক স্পিনিং

বৃহস্পতিবার ব্লক মার্কেটে লেনদেনের নেতৃত্বে উত্তরা ব্যাংক

বৃহস্পতিবার দর পতনের নেতৃত্বে রূপালী ব্যাংক

বৃহস্পতিবার দর বৃদ্ধির নেতৃত্বে সিনোবাংলা ইন্ডাস্ট্রিজ