বাংলাদেশ ব্যাংক

ঋণ বিতরণে পিছিয়ে ১২ ব্যাংক

দেশের খাদ্য উৎপাদনের বিস্তার ঘটাতে চলতি অর্থবছর ব্যাংকগুলোকে ৩৮ হাজার কোটি টাকার কৃষি ও পল্লীঋণ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রথম ৯ মাসে ব্যাংকগুলো ২৪ হাজার ৮৬০ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করেছে, যা লক্ষ্যমাত্রা ৬৫ দশমিক ৪২ শতাংশ। যদিও এই সময়ে দুটি ব্যাংক কোনো ঋণ বিতরণ করতে পারেনি। আরও দুটি ব্যাংকের ঋণ বিতরণের পরিমাণ ১০ শতাংশেরও কম। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

ব্যাংকাররা বলছেন, কৃষিঋণ বিতরণে পরিমাণের পাশাপাশি মানের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। যাতে সব ব্যাংক কৃষিঋণ বিতরণ করে সে জন্যও বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছে। যেসব বাণিজ্যিক ব্যাংকের পল্লী অঞ্চলে নিজস্ব শাখা নেই, সেসব ব্যাংক ক্ষুদ্রঋণ সংস্থার বা এনজিও মাধ্যমে বিতরণ করে সে ব্যাপারেও নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এক্ষেত্রে ক্ষুদ্রঋণ নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ (এমআরএ) নিবন্ধিত ক্ষুদ্রঋণ সংস্থার মাধ্যমে কৃষিঋণ বিতরণ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সুদ নির্ধারণেও এমআরএ নির্ধারিত সুদহারের চেয়ে বেশি সুদ না নিতে পারে সেজন্যও নির্দেশনা দেওয়া রয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে (জুলাই-মার্চ) দুটি ব্যাংক কৃষি ও পল্লী খাতে কোনো ঋণ বিতরণ করতে পারেনি। ব্যাংক দুটি হচ্ছে বেসরকারি খাতের পদ্মা ব্যাংক এবং বিদেশি ওরি ব্যাংক। এছাড়া অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে ১০ শতাংশেরও কম ঋণ বিতরণকারী ব্যাংকগুলো হচ্ছে, বেসরকারি খাতের ইউনিয়ন ব্যাংক এবং বিদেশি এইচএসবিসি। এছাড়া ১৫ শতাংশের কম বিতরণ করা ব্যাংকগুলোর মধ্যে বেসরকারি মধুমতি ব্যাংকের ১২ দশমিক ৯৭ শতাংশ শরীয়াহ ভিত্তিক ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক বিতরণ করেছে ১৩ দশমিক ৩৫ শতাংশ এবং আইএফআইসি ব্যাংক বিতরণ করেছে ১৩ দশমিক ৪৪ শতাংশ। একই সময়ে ২০ শতাংশ বা তার কম ঋণ বিতরণ করেছে সাউথইস্ট ব্যাংক (১৬ দশমিক ২১) এবং সিটিজেন ব্যাংক (২০ শতাংশ)।

খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকার কৃষি ও কৃষি সংশ্লিষ্ট কাজে অর্থ সরবরাহ নিশ্চিত করতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর জন্য মোট ঋণের অন্তত ২ শতাংশ কৃষি খাতে বিতরণ বাধ্যতামূলক করেছে। যেসব ব্যাংক লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী কৃষিঋণ বিতরণ করবে না, তাদের জরিমানার ব্যবস্থা রেখেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। একই সঙ্গে সেসব ব্যাংক লক্ষ্যমাত্রার অর্থ বিতরণে ব্যর্থ হবে তারা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট তহবিলে ওই অর্থ জমা দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। এর ফলে প্রতি বছরই সাধারণ ঋণ বিতরণের পাশাপাশি বাড়ছে কৃষিঋণ বিতরণ।

এ জন্য বছরের শুরুতে লক্ষ্যও ঠিক করে দেওয়া হচ্ছে। যাতে বছরের বারো মাস বিশেষ করে ফসল চাষের শুরুতে কৃষকরা সময় মতো ঋণ পান। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে কৃষিঋণের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ৩৮ হাজার কোটি টাকা। ২০০৯-১০ অর্থবছরে কৃষিঋণের পরিমাণ ছিল ১০ হাজার কোটি টাকারও কম। চলতি অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে বিতরণকৃত কৃষি ও পল্লীঋণের মধ্যে সরকারি ব্যাংকগুলো বিতরণ করেছে ১০ হাজার ১৩৩ কোটি টাকা। এছাড়া বিদেশি ব্যাংকগুলো ৯৬৫ কোটি এবং বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলো বিতরণ করেছে ১৩ হাজার ৭২৬ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, আলোচ্য সময়ে ২০ শতাংশের বেশি কিন্তু ৫০ শতাংশের কম ঋণ বিতরণ করেছে মোট ১২টি ব্যাংক। এসব ব্যাংকের মধ্যে রয়েছে স্ট্যান্ডার্ড, প্রিমিয়ার, গ্লোবাল ইসলামী, যমুনা, মিউচুয়াল ট্রাস্ট, ন্যাশনাল, এনসিসি, শাহাজালাল ইসলামী, স্যোসাল ইসলামী, সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার এন্ড কমার্স, ডাচ বাংলা এবং এক্সিম ব্যাংক।

পর্যালোচনায় দেখা গেছে, কৃষিঋণ বিতরণের পাশাপাশি কৃষকের ফেরত দেওয়া ঋণের হার সন্তোষজনক। আবার কৃষিঋণে খেলাপি কৃষকের হারও তুলনামূলক কম। তথ্য বলছে, কৃষিঋণে খেলাপির হার ৯ দশমিক ০৬ শতাংশ। মার্চ শেষে কৃষকদের মধ্যে বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ৫৬ হাজার ৯৬৫ কোটি টাকা। এ মধ্যে খেলাপির পরিমাণ মাত্র ৫ হাজার ১৬১ কোটি টাকা। ব্যাংকাররা বলছেন, কৃষকরা কখনো ঋণ জালিয়াতি করেন না। প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ বিভিন্ন কারণে মাঝে মাঝে সমস্যায় পড়েন তারা। কিন্তু দেশের বৃহৎ শিল্প গ্রুপের মতো ঋণখেলাপির প্রবণতা তাদের মধ্যে একেবারেই নেই। তবুও কৃষকদের স্বল্প অর্থের ঋণ আদায়ে বেশি তৎপর ব্যাংকগুলো।

তথ্য বলছে, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে কৃষি খাতে বিতরণ করা ঋণের বিপরীতে আদায় হয়েছে ২৭ হাজার ৪৪৩ কোটি টাকা। আর মার্চ শেষে এই খাতে বকেয়া ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩৮ হাজার ২২৯ কোটি টাকা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি অর্থবছর ব্যাংকগুলোকে লক্ষ্যমাত্রার ন্যূনতম ১৩ শতাংশ ঋণ মৎস্য খাতে দিতে হবে। প্রথম ৯ মাসে এই খাতে ঋণ বিতরণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৭২৩ কোটি টাকা, যা বিতরণকৃত ঋণের ১৬ দশমিক ৬৫ শতাংশ। আর লক্ষ্যমাত্রার অন্তত ১৫ শতাংশ ঋণ দেওয়ার কথা প্রাণিসম্পদ খাতে। আলোচ্য সময়ে পশুসম্পদ ও পোলট্রি খাতে বিতরণ করা হয়েছে ৬ হাজার ১১০ কোটি টাকা, যা লক্ষ্যমাত্রার ২৪ দশমিক ৫৭ শতাংশ। এছাড়া নয় মাস শেষে দারিদ্র্য বিমোচনে ৯৯৪ কোটি, শস্য খাতে ১১ হাজার ৬৭৫ কোটি, কৃষি যন্ত্রপাতি ক্রয়ে ১৭৬ কোটি, সেচ যন্ত্রপাতি ক্রয়ে ১৬০ কোটি, শস্য গুদামজাত ও বিপণন খাতে ৮৯ কোটি এবং মৎস চাষে ৩ হাজার ৭২৩ টাকার ঋণ বিতরণ করেছে ব্যাংকগুলো।





বাংলাদেশ

ছবি: সংগৃহীত

খরা মৌসুমে হঠাৎ ফুঁসে উঠেছে তিস্তা, শঙ্কায় কৃষকরা

লালমনিরহাটের ডালিয়া ব্যারেজে খরা মৌসুমে হঠাৎ তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নদীর পাড়ের কৃষক ও বাসিন্দাদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। ভারতের পানি ছেড়ে দেওয়ার ফলে তিস্তার পানিপ্রবাহ বেড়ে যায় এবং তলিয়ে যাচ্ছে জেগে থাকা বালুচর। পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ ব্যারাজের চারটি জলকপাট খুলে দিয়েছে।

১৫ ফেব্রুয়ারি শনিবার বিকেল ৪টার পর থেকে তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে পানিপ্রবাহ বাড়তে শুরু করে। সন্ধ্যা ৬টায় পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে ৫০ দশমিক ১০ সেন্টিমিটার, যা স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটারের কাছাকাছি।

এছাড়া, তিস্তার পানির ন্যায্য হিসাবের দাবিতে তিস্তা পাড়ের মানুষ ১৭-১৮ ফেব্রুয়ারি ৪৮ ঘণ্টা অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। কিন্তু, পানি বৃদ্ধির কারণে কৃষকরা উদ্বিগ্ন। তারা আশঙ্কা করছেন, জেগে ওঠা বালুচরের রসুন, পেঁয়াজ, মিষ্টি কুমড়া, ডাল-বাদামসহ অন্যান্য ফসল নষ্ট হয়ে যাবে।

তিস্তা পাড়ের কৃষক সবুর আলী বলেন, "জেগে উঠা চড়ে তিন বিঘা আলু, রসুন ও পেঁয়াজের আবাদ করেছি। ভারত পানি ছাড়লে আমার ক্ষেত ডুবে যাবে। এখন ফসল নিয়ে শঙ্কায় আছি।"

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপ অপারেটর নুরুল ইসলাম জানিয়েছেন, ভারত থেকে পানি ছেড়ে দেওয়ার কারণে তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে পানি বাড়ছে, তবে কতটা পানি আসবে তা বলা যাচ্ছে না।

তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক ও বিএনপির বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু বলেছেন, "তিস্তার পানি বৃদ্ধির বিষয়ে শুনেছি। তবে ১৭-১৮ ফেব্রুয়ারি তিস্তা পারে ৪৮ ঘণ্টা অবস্থান কর্মসূচি চলবে।"

ছবি: সংগৃহীত

আজহারির মাহফিল শেষে থানায় জিডির হিড়িক

ময়মনসিংহে ড. মিজানুর রহমান আজহারির মাহফিলে মোবাইল চুরির ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় থানায় সাধারণ ডায়েরির (জিডি) পরিমাণে হিড়িক পড়েছে। শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯টা পর্যন্ত থানায় ২০০টি জিডি জমা পড়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

এ ঘটনায় কোতোয়ালি মডেল থানার ডিউটি অফিসার এসআই সাদ্দাম হোসেন বলেন, মাহফিলে দূর-দূরান্ত থেকে লোক আসায় এবং তাৎক্ষণিক কাগজপত্র ম্যানেজ করতে না পারায় জিডির পরিমাণ আরও বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। এই জিডিগুলো মোবাইল ফোন হারিয়ে যাওয়ার ঘটনায় করা হচ্ছে।

মাহফিলটি আল ইসলাম ট্রাস্ট আয়োজিত তাফসিরুল কোরআন মাহফিল ছিল, যা দুপুর ২টা থেকে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত চলেছিল। মাহফিলে মানুষের উপস্থিতি ব্যাপক ছিল, এবং সফল করতে পুলিশ, বিএনপি, জামায়াতে ইসলামি ও অন্যান্য ইসলামী দল এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর ছিল। মোট ২২টি এলইডি পর্দা, তিনটি মেডিকেল ক্যাম্প, চার শতাধিক অজুখানা ও ওয়াশরুম এবং পর্যাপ্ত খাবার পানির ব্যবস্থা ছিল।

এছাড়া, নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিজিবি, র‌্যাব, পুলিশ এবং আনসার ভিডিপির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। শুক্রবার রাত থেকেই আশপাশের জেলা-উপজেলা থেকে মানুষের সমাগম শুরু হয়েছিল, তবে চোর চক্রের কারণে মোবাইল ফোন চুরি হয়।

এদিকে, নেত্রকোনা থেকে আসা জাহিদুর রহমান ও ময়মনসিংহ সদরের শামীম আহমেদ জানিয়েছেন, তারা ওয়াজ শুনতে গিয়েও মোবাইল চুরি হয়ে যায়। কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিকুল ইসলাম খান বলেন, বিপুল সংখ্যক মানুষের সমাগম হওয়ায় কিছু মোবাইল চুরি হয়েছে, এবং তাদের উদ্ধারে পুলিশ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।

ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামে ৭৯২ বিদ্যালয় চলছে প্রধান শিক্ষক ছাড়াই

চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি, পটিয়া ও অন্যান্য উপজেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক সংকটের চিত্র ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। চট্টগ্রাম জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২,২৬৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৭৯২টি বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নেই এবং সহকারী শিক্ষক পদ খালি রয়েছে ১,৩৬২টি। এর ফলে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করতে গিয়ে বিপাকে পড়েছে শিক্ষকরা।

প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য:

  • ফটিকছড়ি উপজেলায় ২২৯টি বিদ্যালয়ের মধ্যে ৬১টি বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নেই।
  • পটিয়া উপজেলায় ১৫২টি বিদ্যালয়ের মধ্যে ৫৭টি বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক পদ শূন্য রয়েছে।

সহকারী শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মকর্তা সংকট:

  • ফটিকছড়ি উপজেলায় ১১০টি সহকারী শিক্ষক পদ খালি রয়েছে।
  • পটিয়া উপজেলায় ৯৩টি সহকারী শিক্ষক পদ শূন্য।
  • উপজেলায় শিক্ষা কর্মকর্তা পদের সংখ্যা কম থাকায় কার্যক্রম পরিচালনা এককভাবে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের উপর নির্ভরশীল।

শিক্ষার গুণগত মানের উপর প্রভাব:
শিক্ষাবিদদের মতে, প্রধান শিক্ষক না থাকলে বিদ্যালয়ের কার্যক্রম পরিচালনা এবং শিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. গোলাম মহিউদ্দিন জানান, প্রধান শিক্ষক এবং সহকারী শিক্ষকের পদ খালি থাকলে শিক্ষার্থীদের অগ্রগতি, ক্লাস ব্যবস্থাপনা ও শৃঙ্খলা বজায় রাখা কঠিন হয়ে পড়ে।

পদ খালি থাকার কারণ:
প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতি সম্পর্কিত মামলা দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে থাকার কারণে পদগুলি খালি পড়ে রয়েছে। এছাড়া, নিয়োগ বিধিতে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা পদে সরাসরি নিয়োগের সুযোগ থাকলেও তা দীর্ঘদিন ধরে হয়নি।

শিক্ষকরা জানান:
একাধিক সহকারী শিক্ষক জানান, প্রধান শিক্ষক না থাকার কারণে তারা একসঙ্গে ক্লাস নেওয়া, দাপ্তরিক কাজ করা এবং বিদ্যালয়ের অন্যান্য দায়িত্ব সামলাতে বাধ্য হচ্ছেন, যা তাদের জন্য অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়েছে।

অংশীদারদের মতামত:

  • পটিয়া উপজেলার সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা আলাউদ্দিন বলেন, "৯ জনের কাজ আমাকে একাই সামলাতে হচ্ছে, এটা অত্যন্ত কষ্টকর।"
  • চট্টগ্রাম জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এস এম আব্দুর রহমান জানান, "পদ খালি থাকার বিষয়টি বারবার কর্তৃপক্ষের নজরে আনার পরেও সমস্যার সমাধান হয়নি।"
  • ড. আবু শাহীন মো. আসাদুজ্জামান, অতিরিক্ত সচিব, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, জানান, "মামলা নিষ্পত্তির চেষ্টা চলছে, যাতে পদোন্নতি এবং সরাসরি নিয়োগের মাধ্যমে শূন্যপদ পূর্ণ করা যায়।"

চট্টগ্রামের প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষক সংকট এবং শূন্যপদ নিয়ে সঙ্কট অব্যাহত রয়েছে, যা শিক্ষার গুণগত মানে ব্যাপক প্রভাব ফেলছে। শূন্যপদ দ্রুত পূরণের জন্য কর্তৃপক্ষের নজর দেওয়া জরুরি।

ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লায় যৌথ বাহিনীর অভিযানে মৃত্যুর ঘটনায় সেনা কমান্ডার প্রত্যাহার

কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলা থেকে যৌথ বাহিনীর অভিযানে আটক মো. তৌহিদুর রহমানের মৃত্যুর ঘটনায় সেনা ক্যাম্পের ক্যাম্প কমান্ডারকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এছাড়া, মৃত্যুর সঠিক কারণ উদঘাটনের জন্য একটি উচ্চপদস্থ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মো. তৌহিদুর রহমান (৪০) মৃত্যুবরণ করেন। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে যৌথ বাহিনী সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে আটক করে।

আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) থেকে জানানো হয়, এই অনাকাঙ্ক্ষিত ও দুঃখজনক ঘটনায় যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে, অভিযুক্ত সেনা ক্যাম্পের ক্যাম্প কমান্ডারকে তাৎক্ষণিকভাবে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তদন্তে দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সেনা আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে, ঘটনার সঠিক কারণ উদঘাটনের জন্য গঠিত তদন্ত কমিটি দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে বলে জানানো হয়।

ছবি: সংগৃহীত

ইজতেমা ময়দানে দেশের সর্ববৃহৎ জুমার নামাজের জামাত অনুষ্ঠিত

গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগ তীরে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের প্রথম ধাপে দেশের বৃহত্তম জুমার নামাজের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে লাখো মুসল্লি অংশ নেন। ময়দান ছাড়িয়ে আশপাশের সড়ক, মহাসড়ক, ফুটপাত এবং অলিগলিও মুসল্লিতে পূর্ণ হয়ে যায়।

শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) দুপুর ১টা ৫১ মিনিটে জুমার নামাজের জামাত শুরু হয় এবং ১টা ৫৬ মিনিটে শেষ হয়। এতে ইমামতি করেন বাংলাদেশের মাওলানা জুবায়ের সাহেব।

ইজতেমার মিডিয়া সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ রায়হান জানিয়েছেন, গত বছরের মতো এবারও ইজতেমা শুরু হওয়ার আগের দিন অর্থাৎ মাগরিবের পর আম বয়ান করা হয়। এবারের টঙ্গীর ৫৮তম বিশ্ব ইজতেমার আনুষ্ঠানিকতা ভারতের মাওলানা ইব্রাহিম দেওলার আম বয়ানের মাধ্যমে শুরু হয়।

এছাড়াও, ইজতেমায় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বয়ানও অনুষ্ঠিত হয়। দুপুর ১টার পর মাওলানা জামাল সাহেব (ভারত) মোজাকেরা করেন, সকাল ১০টায় শিক্ষকবৃন্দের বয়ান হয়, এবং বিশেষ ব্যক্তিদের জন্য টিনশেড মসজিদে বয়ান করেন ভারতের মাওলানা আকবর শরিফ।

বিশ্ব ইজতেমার এই পর্বে ১৪টি বিশেষ ট্রেন সার্ভিস চালু করেছে রেলওয়ে এবং মহাসড়কে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের জন্য নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া, ইজতেমার নিরাপত্তায় ৫টি সেক্টরে ভাগ করে প্রায় ১০ হাজার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কাজ শুরু করেছে।

বিশ্ব ইজতেমা এবার দুই ধাপে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রথম পর্ব ৩১ জানুয়ারি শুরু হয়ে ২ ফেব্রুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে, এবং দ্বিতীয় পর্ব শুরু হবে ৩ ফেব্রুয়ারি, যা ৫ ফেব্রুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হবে।


আন্তর্জাতিক

ছবি: সংগৃহীত

আরও তিন জিম্মিকে মুক্তি দিল ফিলিস্তিনিরা

ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস আরও তিন ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে। শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) তাদের মুক্তি দেওয়া হয়েছে বলে আল জাজিরা জানিয়েছে।

মুক্তিপ্রাপ্ত জিম্মিরা হলেন: ইয়ার হর্ন, সাগি ডেকেল-চেন, এবং আলেকজান্ডার ট্রুফানোভ। তারা ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরে হামাসের হাতে জিম্মি হন। এই মুক্তিপ্রক্রিয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তির অংশ হিসেবে এবং আন্তর্জাতিক রেড ক্রস কমিটির (আইসিআরসি) কাছে তাদের হস্তান্তর করা হয়েছে।

চুক্তির আওতায় ইসরায়েলি কারাগার থেকে ৩৬৯ জন ফিলিস্তিনি বন্দি মুক্তি পাবে। তাদের মধ্যে ৩৩৩ জন সাধারণ বন্দি এবং ৩৬ জন যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত বন্দি রয়েছে। ইতোমধ্যে, প্রায় ২০০০ ফিলিস্তিনি বন্দির মুক্তির প্রক্রিয়া চলছে, যাদের অধিকাংশই ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে আটক হয়ে দীর্ঘদিন ধরে বন্দি ছিলেন।

এছাড়া, গাজার ভবনধসে ৪২ মিলিয়ন টনের বেশি ধ্বংসস্তূপ জমা হয়েছে, যা মিসরের ১১টি গ্রেট পিরামিডের সমান। ধ্বংসস্তূপ সরানোর জন্য ৫০০ থেকে ৬০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রয়োজন। গাজায় ১ লাখ ৩৭ হাজার ২৯৭টি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, এর মধ্যে অনেক ভবন পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়ে গেছে।




বিনোদন

জামিন পাওয়ার পর পরী মনি

নেন নেন বেশি করে নেন, আজ সবাইকে খুশি করে যাব: পরিমণি

ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদের করা হত্যাচেষ্টা মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির এক দিনের মাথায় জামিন পেয়েছেন নায়িকা পরীমণি। আজ (সোমবার) ঢাকার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জুনাইদের আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেন।

এদিন সকালে চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চেয়ে আবেদন করেন পরীমণি। তার আইনজীবী অ্যাডভোকেট নীলাঞ্জনা রিফাত সুরভী জামিনের জন্য আবেদন করেন এবং আদালত তা মঞ্জুর করেন। জামিন পাওয়ার পর পরীমণি সাংবাদিকদের বলেন, "আপনারা সবাই তো জানেন, আমি একটা মামলা করেছিলাম। তার আড়াই বছর পর তিনি (নাসির) আবার এক মামলা করেন। আমি বিশ্বাস করি, আমি সঠিক বিচার পাবো।"

তিনি আরও বলেন, "এটা পরিষ্কার যে আমি একটা মামলা করলাম, তার আড়াই বছর পরে একটা মামলা করা হল শুধু আমাকে দামানোর জন্য।" পরীমণি চলে যেতে চাইলে উপস্থিত জনতার ভিড়ের মধ্যে দাঁড়িয়ে সবার উদ্দেশ্যে বলেন, "নেন নেন বেশি করে নেন, আপনাদের আজ খুশি করে যাব।"

এর আগে গত ৮ জানুয়ারি ঢাকার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, মামলার চার্জগঠন শুনানির দিন পরীমণির হাজিরার জন্য আদেশ দেন। তবে তিনি হাজির না হওয়ায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়।

২০২০ সালের ৬ জুলাই নাসির উদ্দিন মাহমুদ এই হত্যাচেষ্টা মামলা করেন। মামলায় পরীমণি, ফাতেমা তুজ জান্নাত বনি ও জুনায়েদ বোগদাদী জিমি সহ আরও কিছু সহযোগী আসামি হন। মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০২১ সালের ৯ জুন রাত ১২টার পর সাভারের বোট ক্লাবে নাসির উদ্দিনের সঙ্গে পরীমণির বচসা ঘটে এবং একপর্যায়ে পরীমণি তাকে আঘাত করেন।

২০২১ সালের ১৪ জুন পরীমনি ধর্ষণচেষ্টা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে নাসির উদ্দিন ও তার বন্ধু অমির বিরুদ্ধে মামলা করেন, এবং পরীমনির বিরুদ্ধেও মাদক মামলা হয়।